রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:৫৩ পূর্বাহ্ন

যে রোগটি গোপন করে রাখবেন না

যে রোগটি গোপন করে রাখবেন না

স্বদেশ ডেস্খ:

মানবদেহ নানা রোগের বসতি। আমরা এমন ভয়ানক রোগে আক্রান্ত হই, যা চিন্তা করাও কঠিন। অনেকেই আছেন, কিছু কিছু রোগের কথা লজ্জায় গোপন রাখেন। সাধারণত যৌনরোগে আক্রান্ত পুরুষ শারীরিক সম্পর্কের সময় তার সঙ্গীর দেহে এসব রোগ সংক্রমিত করে। যৌনরোগে নারী-পুরুষ উভয়ই আক্রান্ত হতে পারেন। সঠিক সময়ে চিকিৎসা না করালে রোগটি ক্রমে জটিল আকার ধারণ করে। তাই রোগ উপলব্ধি করামাত্র চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।

রোগের লক্ষণ : পুরুষাঙ্গ থেকে সাদা বা হলদে (হালকা হলুদ) রঙের এক ধরনের পদার্থ নিঃসৃত হয় ও প্রস্রাবের সময় ব্যথা করে। যৌনরোগী শারীরিক সম্পর্কের মাধ্যমে সঙ্গীর দেহে রোগ সংক্রমিত করে থাকে। এসব রোগ যাদের আছে, অনেক সময় তারা তা জানেনই না অথবা রোগের প্রতি খেয়াল রাখেন না। একাধিক সঙ্গীর সঙ্গে শারীরিক মিলনে যৌনরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। শারীরিক সম্পর্কের পর যৌনাঙ্গ প্রতিবার পরিষ্কার করা না হলে রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। সংক্রমিত হওয়ার পর চিকিৎসা যদি তাড়াতাড়ি না করা হয়, তা হলে তা যৌনাঙ্গের বাইরে থেকে ভেতরে প্রবেশ করে। ফলে নারীর জরায়ু-টিউব ও ডিম্বকোষ এবং পুরুষের অ-কোষ আক্রান্ত হয়ে থাকে। নারীরা প্রথম দিকে সাংঘাতিক অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন। পরে বন্ধ্যত্ব, বারবার সন্তান নষ্ট হওয়া অথবা মৃত সন্তান প্রসবের ঘটনা ঘটতে পারে। পুরুষ সন্তান জন্মদানের ক্ষমতা হারিয়ে ফেলতে পারেন। আক্রান্ত পুরুষ অথবা নারীর সঙ্গীর মধ্যে রোগ ছড়িয়ে পড়বে। প্রসূতি নারীর যৌনরোগের চিকিৎসা না হলে সন্তান যৌনরোগ নিয়ে জন্মগ্রহণ করতে পারে।

রোগ প্রতিরোধ : যৌবনের শুরুতেই রোগটির কারণ ও মারাত্মক পরিণতি সম্পর্কে জানা ও সচেতন হওয়া দরকার। এ ক্ষেত্রে সুরক্ষা দেবে এমন দ্রব্য সঠিকভাবে ব্যবহার করতে হবে। একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক এড়িয়ে চলতে হবে। শারীরিক সম্পর্কের পর যৌনাঙ্গ ভালো করে ধুয়ে পরিষ্কার রাখতে হবে। রোগীর যৌনসঙ্গীর চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে, যাতে এ রোগ অন্যের মধ্যে না ছড়ায়। কেউ যদি মনে করেন, তার যৌনরোগ আছে, তা হলে দ্রুত চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে। শুরুতে এ রোগের চিকিৎসায় ভালো ফল পাওয়া যায়।

সতর্কতা ও সমাধানতা : ধূমপানসহ সব ধরনের নেশাজাতীয় গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে হবে। যৌনরোগে আক্রান্ত সঙ্গীর সঙ্গে সহবাস করা যাবে না। রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ও মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে চলতে হবে। তবে অভিজ্ঞ চিকিৎসের চিকিৎসায় স্থায়ীভাবে সুস্থ থাকা সম্ভব।

খাদ্যাভ্যাস : পুরুষত্বহীনতা কমাতে চিকিৎসার পাশাপাশি সঠিক খাদ্যাভাসও পারে এ রোগ থেকে মুক্তির অন্যতম উপায়। এ জন্য প্রতিদিন কাঠবাদামসহ যে কোনো ধরনের বাদাম, ছোলা রাতে ভিজিয়ে সকালে খেতে হবে। তাতে শুক্রাণুর স্বল্পতা রোধ করা সম্ভব। গাঢ় লাল রঙের টমেটো পুরুষত্বহীনতা রোধে সহায়তা করে। প্রচুর ফলমূল ও শাকসবজি খেলেও পুরুষত্বহীনতা থেকে মুক্ত থাকা সম্ভব। যৌনক্ষমতার বাড়াতে রসুন খুবই কার্যকর। লাল আটার রুটির সঙ্গে রসুন খেলে শুক্রাণু বৃদ্ধি পায় যৌনক্ষমতাও বাড়ায়। যৌনক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য পেঁয়াজ অত্যন্ত কার্যকরী।

গাজর যৌনক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য উত্তম। কলা ভিটামিন-বি ও ব্রমেলেইন এনজাইমের চমৎকার উৎস, যা দৈহিক শক্তি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে শুক্রাণু উৎপাদন করে পুরুষত্বহীনতা দূর করে। প্রতিদিন আপেল খেলেও দৈহিক শক্তির বৃদ্ধির সঙ্গে যৌবন শক্তি বৃদ্ধি পায়। তবে চিকিৎসকের পরামর্শে সবকিছু গ্রহণ করা উচিত। মনে রাখবেন, কোনো রোগই গোপন করে নয়, চিকিৎসা গ্রহণের মাধ্যমেই সুস্থভাবে জীবনযাপন করা ভালো।

লেখক : সহকারী অধ্যাপক, ত্বক, চর্ম, যৌন ও অ্যালার্জি রোগ বিভাগ, সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল, শেরেবাংলা নগর, ঢাকা

চেম্বার : ডা. জাহেদ’স হেয়ার অ্যান্ড স্কিনিক

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877